বিদেশ থেকে বাংলাদেশে মোবাইল ফোন আনার সাথে কিছু নিয়ম-কানুন মেনে চলা উচিত। বাংলাদেশে মোবাইল ফোন আমদানি করার সময় আপনাকে অনুসরণ করতে হবে এমন নির্দেশিকা এখানে রয়েছে:

  1. ব্যক্তিগত ব্যবহার: মোবাইল ফোন আমদানি শুধুমাত্র ব্যক্তিগত ব্যবহারের জন্য হওয়া উচিত। বাণিজ্যিক আমদানির জন্য আলাদা নিয়ম এবং পদ্ধতির প্রয়োজন হয়।
  2. শুল্ক এবং কর: বাংলাদেশে একটি মোবাইল ফোন আনার সময়, আপনি ফোনের মূল্য এবং স্পেসিফিকেশনের উপর ভিত্তি করে শুল্ক, ভ্যাট (মূল্য সংযোজন কর) এবং সম্পূরক শুল্কের অধীন থাকবেন। এই চার্জগুলি পরিবর্তিত হতে পারে, তাই সর্বশেষ হারের জন্য জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) বা বাংলাদেশ কাস্টমসের সাথে চেক করার পরামর্শ দেওয়া হয়।
  3. পরিমাণের সীমা: একজন ব্যক্তি হিসাবে, আপনি কোনও অতিরিক্ত ডকুমেন্টেশন বা অনুমতি ছাড়াই ব্যক্তিগত ব্যবহারের জন্য একটি ক্যালেন্ডার বছরে পাঁচটি পর্যন্ত মোবাইল ফোন আমদানি করতে পারেন। আপনি এই সীমা অতিক্রম করলে, আপনাকে একটি আমদানি নিবন্ধন শংসাপত্র (IRC) বা একটি বন্ডেড ওয়ারহাউস (BWH) লাইসেন্স পেতে হবে।
  4. IMEI নিবন্ধন: বাংলাদেশে আমদানি করা সকল মোবাইল ফোনের একটি বৈধ IMEI (আন্তর্জাতিক মোবাইল ইকুইপমেন্ট আইডেন্টিটি) নম্বর থাকতে হবে। IMEI নম্বর হল প্রতিটি মোবাইল ডিভাইসের জন্য একটি অনন্য শনাক্তকারী, এবং এটি আমদানি করা ফোনগুলিকে ট্র্যাক করতে এবং সনাক্ত করতে সাহায্য করে৷ আপনার ফোনে একটি আসল এবং বৈধ IMEI নম্বর আছে তা নিশ্চিত করুন৷
  5. নিষিদ্ধ মডেল: নিরাপত্তা সংক্রান্ত উদ্বেগ বা স্থানীয় প্রবিধান মেনে না চলার কারণে কিছু ফোন মডেল আমদানি করা নিষিদ্ধ হতে পারে। কেনার আগে নিষিদ্ধ বা সীমাবদ্ধ মোবাইল ফোন মডেলের তালিকার জন্য বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন (বিটিআরসি) এর সাথে যোগাযোগ করুন।

  6. সার্টিফিকেশন: মোবাইল ফোনগুলিকে আন্তর্জাতিক মান মেনে চলতে হবে এবং গ্লোবাল সিস্টেম ফর মোবাইল কমিউনিকেশনস অ্যাসোসিয়েশন (GSMA) বা ফেডারেল কমিউনিকেশন কমিশন (FCC) এর মতো অনুমোদিত সংস্থাগুলি দ্বারা প্রত্যয়িত হতে হবে৷ কাস্টমস ক্লিয়ারেন্সের সময় কোনো জটিলতা এড়াতে আপনার ফোনে প্রয়োজনীয় সার্টিফিকেশন আছে তা নিশ্চিত করুন।
  7. আনলকড ফোন: আনলক করা মোবাইল ফোন আমদানি করুন যা কোনো নির্দিষ্ট নেটওয়ার্ক বা ক্যারিয়ারের সাথে আবদ্ধ নয়। লক করা ফোনগুলি স্থানীয় সিম কার্ড বা নেটওয়ার্কগুলির সাথে কাজ করতে পারে না, তাদের ব্যবহারযোগ্যতা সীমিত করে৷
  8. ডকুমেন্টেশন: মোবাইল ফোন আমদানি করার সময়, কাস্টমস ক্লিয়ারেন্সের সময় আপনাকে কিছু নথি প্রদান করতে হবে। এর মধ্যে সাধারণত মূল চালান বা রসিদ, আপনার পাসপোর্টের একটি অনুলিপি এবং প্রতিটি ডিভাইসের জন্য একটি বৈধ IMEI নম্বর অন্তর্ভুক্ত থাকে।
  9. বিমানবন্দরের ঘোষণা: আপনি যদি কোনো বিমানবন্দর দিয়ে বাংলাদেশে প্রবেশের সময় মোবাইল ফোন নিয়ে থাকেন, তবে সেগুলো কাস্টমস কাউন্টারে ঘোষণা করুন। প্রয়োজনীয় শুল্ক ফর্মগুলি পূরণ করুন এবং প্রযোজ্য শুল্ক এবং কর পরিশোধ করুন।
  10. অ-সম্মতির জন্য জরিমানা: নিয়ম ও প্রবিধান মেনে চলতে ব্যর্থতার ফলে জরিমানা, মোবাইল ফোন বাজেয়াপ্ত এবং আইনি পরিণতি হতে পারে। কোনো জটিলতা এড়াতে নির্দেশিকা অনুসরণ করা এবং প্রয়োজনীয় শুল্ক ও কর প্রদান করা গুরুত্বপূর্ণ।
  11. ওয়ারেন্টি এবং বিক্রয়োত্তর পরিষেবা: মনে রাখবেন যে বিদেশে কেনা মোবাইল ফোনগুলি ওয়ারেন্টির আওতায় নাও থাকতে পারে বা বাংলাদেশে বিক্রয়োত্তর পরিষেবার বিকল্প নেই। একটি কেনাকাটা করার আগে নিশ্চিত করুন যে আপনি ওয়ারেন্টি শর্তাবলী এবং পরিষেবা উপলব্ধতা বুঝতে পেরেছেন৷
  12. নকল এবং চোরাচালান করা ফোন: নকল বা চোরাচালান করা মোবাইল ফোন কেনা এড়িয়ে চলুন, কারণ সেগুলি অবৈধ এবং আইনি পরিণতি হতে পারে৷ পণ্যের সত্যতা এবং বৈধতা নিশ্চিত করতে অনুমোদিত খুচরা বিক্রেতা বা সম্মানিত বিক্রেতাদের কাছ থেকে ডিভাইস কিনুন।
মনে রাখবেন বাংলাদেশে মোবাইল ফোন আমদানি সংক্রান্ত নিয়ম-কানুন সময়ের সাথে সাথে পরিবর্তিত হতে পারে। মোবাইল ফোন আমদানি করার আগে সর্বাপেক্ষা আপ-টু-ডেট তথ্যের জন্য এনবিআর, বাংলাদেশ কাস্টমস, বা বিটিআরসি-র মতো সরকারী সরকারি সূত্রের সাথে পরামর্শ করার পরামর্শ দেওয়া হলো।